চাবি বা কী তৈরিতে মেটাল

এসএসসি(ভোকেশনাল) - জেনারেল মেকানিক্স- ২ - প্রথম পত্র | NCTB BOOK

মেশিনিং এর ক্ষেত্রে কাটিং টুল শক্ত মেটালের তৈরি করা হয়, ফলে সহজেই এর দ্বারা কার্যবস্তুর ধাতু কর্তন এবং আকারের পরিবর্তন করা যায়। কার্যবস্তু ধাতু উপর নির্ভর করে কাটিং টুলের ধাতু নির্বাচন করা হয়। অন্যদিকে মেশিনিং প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে কাটিং টুল নির্বাচন করা হয়। সাধারণত কার্যবস্তু কাজের ধরণ ও ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে ধাতু নির্বাচন করা হয়ে থাকে। কাটিং প্রক্রিয়ার টুল-চিল এবং টুল-ওয়ার্কশিস এই দুয়ের সংযোগ পৃষ্ঠ তলে সরাসরি কার্য সম্পাদন করা হয়ে থাকে। এ সংযোগ স্থলে প্রক্রিয়াকে ট্রাইবালজী প্রক্রিয়া বলা হয়। সাধরণত মেশিনিং ক্ষেত্রে কার্যবস্তুর জন্য ফেরাস এবং নন-ফেরাস মেটাল ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেকটি ধাতুর বৈশিষ্ট্য ভিন্ন ভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। মেশিনিং প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে তিন ধরণের মেটাল বা ধাতু ব্যবহার করা হয়। ক) ধাতু খ) প্লাস্টিক গ) কম্পোজিট মেটাল।

২.৩.১ কী এর লে-আউট ও পরিমাপ:

কী সাধারণত মাইন্ড স্টীলের টুকরা যা শ্যাফট ও হাবের মাঝে স্থাপন করা হয়। কী সবসময় শাফিটের অক্ষের সমান্তরালে বসানো থাকে। একটি আয়তাকার সাঙ্ক কী লে-আউট ও পরিমাপ পদ্ধতি দেওয়া হলো। কী এর গ্রন্থ, w = d/4 চাবির পুরুত্ব, t2w/3 = d/6, এখানে d = শ্যাফট বা হাব এর গর্ভের ব্যাস।

চিত্র ২.২৮: সাঙ্ক কী এর পরিমাণ

গিব হেড সাঙ্ক কী- এটা একটি আয়তাকার সাঙ্ক কী যার এক প্রান্তে হেড অবস্থিত। এই হেডের কারণে শ্যাফট হতে কী বিচ্ছিন্ন করা সহজ হয়। একটি গিব হেড কী লে-আউট ও পরিমাপ পদ্ধতি দেওয়া হলো। কী এর প্রস্থ, w = d/4 বড় প্রান্তের পুরুত্ব, T=2w/3 = d/6, এখানে d = শ্যাফট বা হাব এর গর্তের ব্যাস

২.৪ বিয়ারিং (Bearing):

প্রতিটি যান্ত্রিক সিস্টেমে বিভিন্ন মেশিন উপাদানের মধ্যে আপেক্ষিক গতি অন্তভুক্ত। ধর্ষণে শক্তি অপচয় ও স্পর্শক তলে ক্ষয়ের অবনতির কারণে আপেক্ষিক গতি বৃদ্ধি পায়। বিয়ারিং হল এমন ধরনের যন্ত্রাংশ যা এক যন্ত্রাংশ থেকে অন্য যন্ত্রাংশে লোড স্থানান্তরে ঘর্ষণ কমায় ফলে আপেক্ষিক গতি বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, একটি ট্রান্সমিশন শ্যাফট ও হাউজিং এর মধ্যে আপেক্ষিক থাকে, যেখানে বিয়ারিংসমূহ শ্যাফটের সাপোর্ট পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে। শ্যাফট ও হাউজিংএ লোড স্থানান্তরের সময় এদের মধ্যে ধর্ষণের কারণে বিদ্যুতের অপচয় কমাতে সাহায্য করে।

রোলিং এলিমেন্ট হিসাবে বিয়ারিং-কে প্রধানত দুটিভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন-

• বল বিয়ারিং ও

• রোলার বিয়ারিং

২.৪.১ বল বিয়ারিং (Ball Bearing):

বল বিয়ারিং সর্বধিক ব্যবহৃত সাধারণ বিয়ারিং যা দুটি ধাতব রিং এর মধ্যে বল আকারে অবস্থিত। আর এ ধাতব রিং-কে রেস বলে, একটি বাইরের রেস অন্যটি ভিতরের রেস। বলগুলোকে নির্দিষ্ট অবস্থানে রাখতে যে ধাতব রিং বা আচ্ছাদন ব্যবহার করা হয় তাকে কেস বলে। বিয়ারিং ব্যবহারে শক্তির অপচয় কম হয়। ভিতরের রেসটি মুক্ত অবস্থায় ঘুড়ে এবং বাইরের রেসটি স্থির অবস্থায় থাকে। ভিতরের রেসটি শ্যাফট এর সঙ্গে লাগনো হয় এবং বাইরের রেসটি মটরের সাথে লাগানো থাকে। বল বিয়ারিং কম বাধা প্রদানে, সহজে পরিবর্তনযোগ্য, কম দামে, অধিক লোড বহনে, দির্ঘায়ু ব্যবহারে সহায়তা প্রদান করে থাকে। এটি ঘূর্ণনে কম শব্দ হয়। ব্যবহারের দিক বিবেচনায় বল বিয়ারিং কে নিম্নলিখিতভাবে ভাগ করা যায় :

ক) ডিপ-গ্রুভ বল বিয়ারিং

খ) সিঙ্গেল রো এঙ্গুলার কন্ট্যাক্ট বিয়ারিং

গ) সেলফ-এলাইনিং বিয়ারিং

চিত্র ২.৩০ : ডিপ-গ্রুভ বল, সিঙ্গেল রো একটুলার ফন্ট্যান্ট এবং সেলফ-এলাইনিং বিয়ারিং

২.৪.২ রোলার বিয়ারিং (Roller Bearing): রোলার বিয়ারিং বল বিয়ারিং এর মত কাজ করে থাকে তবে বল বিয়ারিং এর তুলনায় অধিক লোড বহন করতে পারে এবং অধিক আনুভূমিক মোডে অবস্থান করতে পারে। রোলার বিয়ারিং সিপিক্ষিক্যাল বা ট্যাপার টাইল হতে পারে।

চিত্র ২.৩১: রোলার বিয়ারিং

২.৪.৩ লিনিয়ার বিয়ারিং (Linear Bearing): 

রৈখিক বিয়ারিং এ দুটি রেসের মধ্যে বল বা ঘূর্ণায়মান উপাদান থাকে তবে এটি যেকোনো উপাদানকে রৈখিক গতি দিতে ব্যবহৃত হয়। লিনিয়ার বিয়ারিংয়ের সহজ উদাহরণ হল স্লাইডিং ডোর, আলমারির ড্রয়ার ইত্যাদি।

২.৪.৪ জুয়েল বিয়ারিং (Jewel Bearing):

যেখানে ঘড়ি এবং মিটারের মতো খুব ছোট শ্যাফট থাকে সেখানে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি আকারে খুব ছোট এবং অন্যান্য বিয়ারিংয়ের তুলনায় খুব সুক্ষ কাজ করে। এটি নির্দিষ্ট উপকরণ থেকে তৈরি করা হয়।

চিত্র ২.৩৩: প্লেইন ইন বিয়ারিং

২.৪.৫ প্লেইন বিয়ারিং (Plain Bearing) : টি ভারবহনের সবচেয়ে সহজ প্রকার। এটি একটি ভারবহন পৃষ্ঠ নিয়ে গঠিত এবং এতে কোনো ঘূর্ণায়মান উপাদান থাকে না। শ্যাফটি বিয়ারিং হোলের ভিতরে ঘুরছে। এটি স্লাইডিং ঘর্ষণ প্রদান করে যা ঘূর্ণায়মান ঘর্ষণ থেকে বেশি। এর একটি উদাহরণ হল ভারবহন পৃষ্ঠের ভিতরে শ্যাফট ঘূর্ণায়মান।

চিত্র ২.৩৪: ফ্লুইড বিয়ারিং

২.৪.৬ ফ্লুইড বিয়ারিং (Fluid Bearing): এটি হল বিপ্লবী ধরণের বিয়ারিং যা ধাতব বিয়ারিংগুলো প্রতিস্থাপন হিসেবে কাজ করে। এখানে ভরলটি দুই- উপাদানের সংস্পর্শে আসে যা বর্ষপকে হ্রাস করে। তরল চালের কারণে, দুটি উপাদান সর্বদা আলাদা থাকে এবং সংস্পর্শে আসে না। এটি অন্য যেকোনো খাত বিয়ারিংয়ের তুলনায় খুব কম শব্দ এবং কম্পন প্রদান করে।

২.৪.৭ মেগনেটিক বিয়ারিং(Magnetic Bearing):

চিত্র ২.৩৫ মেগনেটিক বিয়ারিং

এটি একটি খুব জনপ্রিয় বিয়ারিং কারণ ঘূর্ণায়মান উপাদানের গভির কোন সীমা নেই। দুটি ধরণের চৌম্বকীয় বিয়ারিং পাওয়া যায় একটি হল সক্রিয় বা অ্যাক্টিভ এবং অন্যটি প্যাসিভ। অ্যাক্টিভ টাইপে যা অবস্থানের বাইরে চলে যাওয়ার সাথে সাথে স্ট্যান্টকে কেন্দ্রে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বৈদ্যুতিক চুম্বক ব্যবহার করে চালু করা হয়। প্যাসিভ টাইপে স্থায়ী চুম্বক ব্যবহার করি যা ডিজাইন করা কঠিন।

২.৫ বিয়ারিং এর প্রয়োজনীয়তা:

নিম্নলিখিত কারণসমূহের জন্য বিয়ারিং এর প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য; 

ক) এটা ঘর্ষণজনিত বাধাকে কমাতে সাহায্য করে।

খ) এটা শ্যাফটকে একই অক্ষে নিয়ন্ত্রণ করে ঘুরতে সহায়তা করে।

গ) এটা শ্যাফটকে ধারন করে থাকে।

ঘ) এটা যে কোনো প্রকার ভার ও ঘর্ষণের ক্ষেত্রে উপযোগী হয়।

ঙ) এটা ব্যবহারে শ্যাফটের কোনোরূপ ক্ষতির আশংকা থাকে না।

২.৬ বিয়ারিং এ ব্যবহৃত লুব্রিক্যান্টস:

বিয়ারিং-এ ব্যবহৃত লুব্রিক্যান্টসমূহ নিম্নে প্রদত্ত হলো: 

ক) তেল খ) গ্রিজ গ) এয়ার/ গ্যাস

২.৭ বিয়ারিং-এর যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ:

ক) কাজ শেষে এটাতে প্রয়োজন মতো তেল জাতীয় পদার্থ দিয়ে রাখতে হয় যাতে মরিচা না পড়ে। 

খ) বিয়ারিং-এর উপর বেশি চাপ না পড়ে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। হাউজিং-এ বিয়ারিং ক্যাপ শক্তভাবে ফিট থাকতে হবে।

গ) যে সকল মেশিনে বিভিন্ন প্রকার রিয়ারিং ফিট করা থাকে, মেশিন চালনা করার পূর্বে বিয়ারিংগুলোতে গ্রীজ বা তেল জাতীয় দ্রব্য দিয়ে কাজ করতে হয়।

ঘ) মেশিনে কাজ করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে ঘর্ষণ বিয়ারিংগুলোর তাপমাত্রা ৬০ সেন্টিগ্রেড থেকে ৭০ সেন্টিগ্রেডের বেশি না হয়।

ঙ) বিয়ারিং ক্লিয়ারেন্স চেক করে দেখতে হবে।

চ) লুব অয়েলের প্রকৃত ভিসকোসিটি থাকা উচিত।

Content added || updated By

আরও দেখুন...

Promotion